সমুদ্রের অন্ধকার গভীরে এমন কিছু প্রাণী বাস করে, যাদের দেখা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ঘোস্ট শার্ক। নাম শুনলেই মনে হতে পারে এগুলো কোনো হাঙ্গর, কিন্তু সত্যিই এরা হাঙ্গর নয়। ঘোস্ট শার্ক হলো বিশেষ ধরনের গভীর জলের মাছ, যাদের দেখতে অনেকটা ভূতের মতো লাগে।
![]() |
সংগ্রহীত |
ঘোস্ট শার্কের শরীর সাধারণত সাদা বা ফ্যাকাশে। এদের চোখগুলো এতটাই শূন্য, যে এগুলোকে দেখে মনে হয় যেন সমুদ্রের গভীরে কোনো অদ্ভুত আত্মা তাকিয়ে আছে। এদের ত্বক মসৃণ এবং কঙ্কাল তৈরি হয় শুধু নরম তরুণাস্থি (Cartilage) দিয়ে, যা মানুষের নাক বা কানের হাড়ের মতো। তাই এদের শরীর হালকা ও নমনীয়, এবং গভীর জলের অন্ধকারে সহজে চলাচল করতে পারে।
অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক তথ্য
বিজ্ঞানীরা ঘোস্ট শার্ক নিয়ে এক অদ্ভুত তথ্য উদঘাটন করেছেন। এদের জিন বা জিনোম হলো পৃথিবীর পরিচিত মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে ধীরগতিতে পরিবর্তিত হওয়া জিনোম। অর্থাৎ, লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এদের চেহারা ও গঠন প্রায় অপরিবর্তিত আছে। এই ধীর পরিবর্তন আমাদের পৃথিবীর ইতিহাস এবং বিবর্তনের এক রহস্যময় অধ্যায়ের মতো।
বসবাস ও জীবনধারা
ঘোস্ট শার্ক সাধারণত সমুদ্রের অনেক গভীর এবং অন্ধকার অঞ্চলে বাস করে। এদের খাবার খুঁজে বের করার জন্য উন্নত ইন্দ্রিয় ব্যবহার করতে হয়। এদের সম্পর্কে মানুষের জানা তথ্য খুবই কম, কারণ এরা সচরাচর মানুষের চোখে পড়ে না।
সমুদ্রের গভীরতা যেন এক রহস্যময় জগৎ, যেখানে ঘোস্ট শার্কের মতো প্রাণী আমাদের কল্পনার সীমা ছাড়িয়ে যায়। এদের শূন্য দৃষ্টির চোখ, ফ্যাকাশে দেহ এবং ধীরগতির জিনোম এই প্রাণীকে প্রকৃতির এক ভূতের মতো সৃষ্টি বানিয়েছে।
সমুদ্রের অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা এই “ভূত”দের প্রতি আমাদের কৌতূহল এবং গবেষণার আকর্ষণ দিন দিন বেড়েই চলেছে।